ইসলামিক বই pdf free download

বিভিন্ন ধরনের দলিল সনাক্ত উপায় ও পদ্ধতি

আজ আমরা আলোচনা করব অতি গুরুত্বপূন ১০ প্রকার দলিল চেনার উপায় ও ফাইল DOC ডাউনলোড লিংক শেয়ার করব। এই দলিলগুলো প্রায় সময় কাজে লাগে। আশা করছি দলিলগুলো ধরন দেখে চিনতে পাববেন।

সহজে দলিল চেনার ১০টি টিপস

১। সাফ-কবলা দলিল : প্রথমেই কথা বলা যাক, সাফ-কবলা দলিল। কোনো ব্যক্তি তার সম্পত্তির জন্য অন্যের কাছে বিক্রয় করার সময় যে দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে দেন তাকে আমরা সাফ-কবলা অথবা কবলা দলিল বলি। সাফকবলা দলিল সরকারকৃত নির্ধারিত স্ট্যাম্পে লেখার পর দলিলদাতা অর্থাৎ বিক্রেতা সাব রেজিস্ট্রারের অফিসে উপস্থিত হয়ে গ্রহীতা (যে ব্যক্তি ক্রয় করবে) 

অর্থাৎ খরিদ্দারের (যে ব্যক্তি বিক্রয় করবে) বরাবরে রেজিস্ট্রি করে দেন। এ দলিলটি রেজিস্ট্রি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলিলের তফসিলে লিখিত অর্থাৎ বিক্রীত ভূমির যাবতীয় স্বত্ব দলিলদাতা থেকে বিলুপ্ত হয়ে দলিল গ্রহীতা অর্থাৎ খরিদ্দারের ওপর অর্পিত গ্রহীত হয়। 

আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশী রেজিষ্ট্রীকৃত দলিল হলো সাফকবলা দলিল।  বর্তমান সময়ে দলিলের ফরমেট অনুসারে দলিলের প্রথম পাতায় দলিলের প্রকৃতি অংশের মাধ্যমে দলিলের পাতায় সাফ-কবলা লিখা লেখা থাকে। 

২। বায়নাপত্র দলিল : কোন ব্যক্তির সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য দাতা ও গ্রহীতা সহজ ভাবে বললে, ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে যে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয় সেটিই বায়নাপত্র দলিল। বর্তমান সময়ে বায়না দলিল রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। বায়নাপত্র দলিললে ব্যক্তি বায়নাপত্র মারফত জমির দখল বুঝিয়ে দেন এবং বায়না মূল্যের টাকা নিয়ে থাকেন। যদি কোন কারণে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রী না করে থাকেন, তাহলেও আপনার বিরুদ্ধে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৩ ধারায়, আংশিক বিক্রয় কার্যকরী হবে। অতএব, জমিতে খরিদ্দারের স্বত্ব হয়েছে বলে গণ্য করা হবে। 


৩। দানপত্র দলিল : যে কেউ শর্তে বা বিনাশর্তে ব্যক্তি তার সম্পত্তি দান করতে পারে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শর্তে সম্পর্তি দান করলে, গ্রহীতা শর্ত সাপেক্ষে সম্পদের সুবিধা ভোগ করতে পারে। দানপত্র দলিলে বয়স বা নিদের্শনাগুলো স্পষ্টভাবে লিপিব্ধ থাকে। দানপত্র দলিল ফাইল লিংকে ডাউনলোড করুন। 

৪। অসিয়তনামা দলিল : অসিয়তনামা দলিল অপনাম দানপত্র/ দানপত্র দলিল। দাতার মারা যাওয়া পর থেকে এই দলিলেন কার্যকম শুরু হয়। অসিয়তনামা দলিলের মাধ্যমে পছন্দের ব্যাক্তিকে দাতা তার মোট সম্পত্তির  তিন ভাগের একভাগ অসিয়ত করতে পারেন। গত সম্পতির মালিক মারা যাওয়ার পর থেকে অসিয়তনামা (দাতা) ব্যক্তির সৎকারের টাকা বাদ দিয়ে, যে সম্পদ বা টাকা থাকবে তার ৩ ভাগের এক ভাগ অসিয়ত নামা দলিলের গ্রহীতা মালিক ও অবশিষ্ট সম্পদ দুই তৃতীয়াশের মালিক প্রাপ্ত উত্তরাধিকারের সবাই মালিক হবে।

৫। হেবা দলিল : দান পত্র দলিল কে হেবা দলিল বলা হয়। হেবা দলিলের মধ্যে মূলত বিশেষ কিছু পার্থক আছে। মুসলমান গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মধ্যে দানপত্র দলিল হেবা দলিল। হেবা দলিল কোনো কিছুর বিনিময় করে নয়, কেবল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সন্তুষ্ট হয়েই হেবা দলিলের মাধ্যমে সম্পদ দান করা হয়। হেবা দলিল শর্তবিহীন অবস্থায় দান বিক্রয়, কট রেহান ও রূপান্তর বা অন্য সব ক্ষমতা প্রদানে দানপত্র বা হেবা দলিল করতে হয়। 

হেবা দলিলে জমির বা সম্পদেরস্বত্ব সম্পর্কে দাতার কোনোরকম দাবি থাকলে সেখানে দান বা হেবা শুদ্ধ হবে না এবং তা যে কোনো সময়  হেবা দলিল বাতিলযোগ্য। হেবা দলিলে দানপত্রে দাতার কোনো স্বার্থ সংরক্ষিত থাকে না। 

৬। এওয়াজ বদল : এওয়াজ বদল দলিল বলতে - সহজ বাংলা ভূমি বা সম্পদের অদল-বদল করাকে বুঝায়। আরো সহজ ভাবে বললে, দলিলের মাধ্যমে বদল করা। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরস্পর এওয়াজ পরিবর্তন করতে পারেন। যেমন, মাসুদের বাড়ির পাশে রহিমের এক শতাংশ জমি আছে এবং রহিমের বাড়ির পাশে মাসুদের এক শতাংশ  আছে। মাসুদ ও রহিম তাদের সুবিধা মত ব্যাবহারের জন্য উভয়ের জমি এওয়াজ বদল করে নিতে পারবে। তবে,  এওয়াজ বদল দলিল অবশ্যই রেজিষ্ট্রী করতে হবে। এই দলিলে কে্ও প্রিয়েমশান করতে পারে না। 

৭। না-দাবী দলিল : কোনো ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট কোনো সম্পত্তিতে তার স্বত্বাধিকার নেই, এই মর্মে অথবা স্বত্বাধিকার ত্যাগ করেছেন এই মর্মে দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে দিতে পারবেন। 

এই ধরনের দলিলকে না-দাবি দলিল বলে। ওয়ারিশান সম্পত্তির ক্ষেত্রে কোন ওয়ারিশ তার হিস্যা ছেড়ে দিলে না-দাবী দলিলের মাধ্যমে স্বত্তত্যাগ করে থাকে।

৮। বয়নামা দলিল : অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যাংক ঋণ নেওয়ার পর - ঋণ পরিশোধ করে না করাই, অতিরিক্ত ঋণে ও মেয়াদের কারণে সম্পদ সরকারী স্বার্থে সম্পত্তি নিলাম বিক্রয় হয়। এরপর সম্পদ যিনি নিলাম খরিদ করেন তাকে একটি নিদর্শনপত্র বা সার্টিফিকেট দেয়া হয়। 

খরিদ্দারকে প্রদত্ত যে সার্টিফিকেট বয়নামা নামে ক্রয়কৃত ব্যক্তিকে সার্টিফিকেট আদালত প্রদান করে থাকে তাকে বয়নামা দলিল বলা হয়। 

৯। রায়-ডিক্রি  দলিল : ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি, টাকা-পয়সা কিংবা অন্যান্য যে কোনো কারণে আদালতে মামলা হলে আদালত  লিখিতভাবে যে রায় দিয়ে থাকে বা ডিক্রী প্রদান করে থাকে  তাকে রায়-ডিক্রী দলিল বলা হয়।

১০। বেনামী দলিল : অনেক ক্ষেত্রেই অবৈধ সম্পদ অর্জন বা ব্যাংক ঋণের কারণে সম্পদ বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে এমন পরিস্থিতিকে কোন ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠান তার নিজের নামে সম্পত্তি খরিদ করতে অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া বিবেচিত হলে ঐ ব্যক্তি নিজ অর্থে ও স্বার্থে সম্পত্তি খরিদ করে তার দলিল নিজের নামে না করে তার কোন নিকট আত্মীয়ের বা বিশ্বাসী বন্ধু বান্ধবের নামে বেনামী দলিল করে থাকে। যদিও অনেকেই এসব দলিলকে সাফকবলা বা হেবা বলে কিন্তু অফিসিয়ালি এটাকে বেনামী দলিল বলা হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url